বাড়িতে সহজে ক্যাকটাস চাষ;
- Ezaz Maruf
- May 1, 2019
- 3 min read

আসুন জেনে নেই বাড়ির চিলেকোঠা বা ছাদে অথবা ঘরের বারান্দায় অথবা বাড়ির আঙ্গিনায় বা উঠোনে কিভাবে *ক্যাকটাস চাষ করতে হবে
*কিভাবে ক্যাকটাস চাষের টব/মাটি তৈরি করবেন
*ক্যাকটাস চাষে কি ধরণের টব/পাত্রের আকৃতি বাছাই করবেন
*ক্যাকটাস জাত বাছাই করা
*ক্যাকটাস চাষ/রোপনের সঠিক সময়
*কিভাবে ক্যাকটাসের বীজ বপন ও সঠিক নিয়মে পানি সেচ দিবেন
*সঠিক নিয়মে ক্যাকটাসের চাষাবাদ পদ্ধতি/কৌশল
*ক্যাকটাস চাষের সারের পরিমাণ ও সার প্রয়োগ
*কিভাবে ক্যাকটাসের বাগানের যত্ন ও পরিচর্যা করবেন
*ক্যাকটাসের ঔষধি গুনাগুন
*ক্যাকটাস অন্যান্য ব্যবহার
ক্যাকটাস মরুভূমির উদ্ভিদ। তবে ক্যাকটাসের আদি নিবাস আমেরিকায়। এদেরকে সাধারণত মরুভূমিতে ব্যপকভাবে দেখা যায়। ক্যাকটাসের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে অল্প কিছু সংখ্যক ক্যাকটাস আমাদের দেশের আবহাওয়ায় খুবই উপযোগী। বাড়িতে ড্রইং রুমে ক্যাকটাসের শোভা অতুলনীয়। আপনিও আপনার বাড়ির চিলেকোঠা বা ছাদে অথবা ঘরের বারান্দায় অথবা বাড়ির আঙ্গিনায় বা উঠোনে এই ক্যাকটাসের চাষ করতে পারেন। আসুন জেনে নেই কিভাবে বাড়িতে ক্যাকটাসের চাষ করতে হবে।
কিভাবে ক্যাকটাস চাষের টব/মাটি তৈরি করবেন:
উষ্ণ, শুস্ক এবং বেলে অথবা বেলে দোআঁশ মাটি ক্যাকটাস চাষের জন্য উপযোগী। তাই ক্যাকটাস চাষের জন্য বেলে দোআঁশ মাটি বাছাই করা সর্বোত্তম। এতে ক্যাকটাসের দ্রুত বৃদ্ধি হয়।
ক্যাকটাস চাষে কি ধরণের টব/পাত্রের আকৃতি বাছাই করবেন:
ক্যাকটাস সাধারণত টবে লাগানো হয়। তাই ক্যাকটাস চাষের ক্ষেত্রে মাটির টব বা প্লাস্টিকের পাত্র নির্বাচন করা উচিত। কারণ মাটির পাত্রে পানি ও বাতাস চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত অতি সুক্ষ সুক্ষ ছিদ্র থাকে।
ক্যাকটাস জাত বাছাই করা:
সারা বিশ্বে প্রায় ২৫০০ এর বেশি প্রজাতির ক্যাকটাস আছে। তাঁর মধ্যে একাইনো ক্যাকটাস, ওল্ড লেডি, সেরিয়াস, নিপল ক্যাকটাস, সেরেয়াস, গোল্ডেন ব্যারেল, এপিফাইলাম, মাদার-ইন-ল চেয়ার, ফণীমনসা অন্যতম।
ক্যাকটাস চাষ/রোপনের সঠিক সময়:
ক্যাকটাস প্রায় বছরের যেকোন সময়েই লাগান যায়। তবে মার্চ মাস থেকে এপ্রিল মাস ক্যাকটাস চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়।
কিভাবে ক্যাকটাসের বীজ বপন ও সঠিক নিয়মে পানি সেচ দিবেন:
ক্যাকটাস সাধারণত জোড় কলম ও কাটিং পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও বর্তমানে বীজ দ্বারাও ক্যাকটাসের বংশবৃদ্ধি হয়। কিন্তু দেখা যায় বীজ থেকে চারা উৎপাদন করতে গেলে তা অনেক দেরী হয়ে যায়। মনে রাখতে হবে ক্যাকটাস খুবই পানি সংবেদী উদ্ভিদ। তাই পানি দেওয়ার সময় সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। বেশী পানি দেওয়া যেমন ক্ষতিকর তেমনি কম পানিও ক্যাকটাসের বৃদ্ধি ব্যহত করে। শীতকালে ক্যাকটাসে পানি দেওয়ার প্রয়োজন হয় না তবে যদি মূল শুকিয়ে যায় তাহলে অন্তত একবার পানি দেওয়া যেতে পারে।
সঠিক নিয়মে ক্যাকটাসের চাষাবাদ পদ্ধতি/কৌশল:
ক্যাকটাস চাষের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম সতর্কতার সহিত খেয়াল রাখতে হবে। ক্যাকটাসকে টবে স্থাপন করার পূর্বে টবটি ভালভাবে পরিস্কার ও জীবাণু মুক্ত করে শুকিয়ে নিতে হবে। টবের মাটিতে জৈব সার তৈরীর পরপরই পাত্রে চারা রোপণ করা উচিত না, অন্তত ১৫দিন পর চারা টবে রোপণ করা উচিত।
ক্যাকটাস চাষের সারের পরিমাণ ও সার প্রয়োগ:
ক্যাকটাস চাষের জন্য বেশকিছু সার সঠিক মানে দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি বাড়িতে তৈরি জৈব সার ক্যাকটাসে দিতে পারেন। এছাড়াও পচা গোবর, ভাঙা হাড়ের গুড়া, পচা পাতা, বালি ইত্যাদি ক্যাকটাসের গোড়ায় দিতে পারেন।
কিভাবে ক্যাকটাসের বাগানের যত্ন ও পরিচর্যা করবেন:
যেহেতু ক্যাকটাস মরুভূমির উদ্ভিদ তাই স্বভাবতই এরা সূর্যালোক পছন্দ করে থাকে। তাই ক্যাকটাসের টবটি এমন যায়গায় স্থাপন করতে হবে যেখানে সার্বক্ষণিক সূর্যের আলো পড়ে। নইলে দেখা যায় ছায়াতে জন্মানো ক্যাকটাসে ফুল হয় না। এছাড়াও ক্যাকটাস চাষে পর্যাপ্ত বাতাসের প্রয়োজন তাই সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ক্যাকটাসের ঔষধি গুনাগুন:
ক্যাকটাস এর মধ্যে অনেক ঔষধি গুণাগুণ বিধ্যমান। বর্তমানে গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাকটাস টিউমার, আলসার, প্রদাহ এবং বাতজনিত রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও ক্যাকটাস ক্যান্সার আক্রান্ত কোষের বৃদ্ধি রোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। ক্যাকটাস টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হাইপারলিপিডিমিয়াস এবং ক্ষত নিরাময়েও সাহায্য করে।
ক্যাকটাস অন্যান্য ব্যবহার:
ক্যাকটাসের বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। ঠিক মতো যত্ন করতে পারলে এক একটি ক্যাকটাস গাছকে প্রায় ২৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব! ক্যাকটাস দিয়ে সাধারণত ড্রইংরুম, বেডরুম, রিডিংরুম, বারান্দা, ব্যালকনি, কার্নিশ, বাগান, বাড়ির আঙিনা, সিঁড়ি সাজাতে এর তুলনা অতুলনীয়।
সংকলনে- মোঃ এজাজ আহমেদ মারুফ
Comments